
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কিশোর গ্যাংয়ের হাতে নির্মমভাবে নিহত কিশোর ইয়াছিন খালাসির হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা রাস্তায় শত শত নারী–পুরুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেন।
নিহত ইয়াছিন খালাসি থানমাত্তা গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসির ছেলে।
ঘটনার দিন তার সঙ্গে থাকা আরও দুইজন আহত হলেও ইয়াছিনের মৃত্যুই এলাকাবাসীকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয়।
মানববন্ধনে জানানো হয়—
ঈদুল ফিতরের আগের রাতে বারুদ (বাজি) ফুটানোকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং সদস্য রিগান শরীফ, নাজমুল শরীফ ও তাদের সহযোগীদের সঙ্গে ঝগড়া হয়। অভিভাবকরা বিষয়টি মিমাংসা করলেও কিশোর গ্যাং বিষয়টি মনে রাখে।
১০ মে রাত ৯টার দিকে কিশোর গ্যাং সদস্যরা ইয়াছিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে সেখানেই মারা যায় কিশোর ইয়াছিন খালাসি।
বাবার অভিযোগ: আসল আসামিদের বাদ দিয়ে অন্যদের ফাঁসানো হয়েছে
নিহত ইয়াছিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসি অভিযোগ করে বলেন> “আমি যাদের নাম দিয়ে মামলা করেছি, চার্জশিটে তাদের বাদ দিয়ে অন্য নির্দোষ লোকজনকে আসামি দেখানো হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রিফাত দারোগা আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা না দেওয়ায় মূল আসামিদের বাদ দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন—> যারা আমার ছেলেকে মেরেছে, তারা এখনও ধরা পড়েনি। আমি গরিব মানুষ—আমার ছেলের হত্যার বিচারই এখন একমাত্র দাবি।”
মায়ের কান্না: ‘ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে’
মানববন্ধনে নিহতের মা ইয়াসমিন বেগম বলেন—> “রাত ৯টার সময় আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই, আসল খুনিদের ফাঁসি চাই।”
স্থানীয় ইউসুফ খালাসি বলেন> “ঘটনার রাতেই আমি বটগাছের নিচে ছিলাম। ইয়াছিনকে ডেকে নেওয়া এবং পরে ছুরিকাঘাত করার মুহূর্তটি আমি দেখেছি। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে—এটি অত্যন্ত ভয়াবহ।”
এলাকাবাসীর দাবি
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন—
ইয়াছিন খালাসি হত্যার প্রকৃত তদন্ত, মূল আসামিদের গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য রোধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।