প্রথম শ্রেণীর এক ছাত্রকে (৭) বলাৎকারের অভিযোগে ডাকা সামাজিক বিচার-সালিশে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন চন্দনাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে কুমিল্লার আদালতে পাল্টাপাল্টি পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও মামলার বিবরণ অনুযায়ী জানা যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার স্কুলে যাওয়ার পথে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রকে চন্দনাইল গ্রামের ইয়ামিন (২২) মিষ্টি ও চকলেট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে একটি ঝোপঝাড়ে নিয়ে বলাৎকার করে।
চন্দনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার পর ছাত্রটি অসুস্থ অবস্থায় স্কুলে এসে শিক্ষকদের কাছে সব খুলে বলে। তিনি তাৎক্ষণিক ছাত্রের পরিবার, স্থানীয় সর্দার এবং প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন।
বলাৎকারের অভিযোগটি স্থানীয় ভাবে মীমাংসার জন্য ঐ দিন দুপুরে চন্দনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ক্লাসরুমে সালিশি বৈঠক ডাকা হয়। সালিশে বলাৎকারের শিকার ছাত্র, তার পরিবার এবং অভিযুক্ত ইয়ামিন ও তার পিতাসহ এলাকার ২০-২২ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
সালিশে উপস্থিত শ্রীকাইল সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার জানান, আলোচনার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতিতে ৫ জন আহত হন। অপ্রত্যাশিত এ ঘটনায় স্কুলের অন্য শিশু শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে।
এ ঘটনায় বলাৎকারের শিকার ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে ইয়ামিনকে অভিযুক্ত করে কুমিল্লা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
অন্যদিকে, মারামারির ঘটনায় আহত মোঃ মহসিন বাদী হয়ে ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি পাল্টা মামলা করেন। মামলাটি সিআইডি কুমিল্লাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
স্থানীয় ইউপির সাবেক সদস্য কায়েদে আজম জানান, অভিযুক্ত ইয়ামিনের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানি, চুরি ও মাদক সেবনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
বাঙ্গরা বাজার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনার খবর পেয়েই ওই গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। যেহেতু আদালতে মামলা করেছে, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্তে সহযোগিতা করা হবে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।