1. live@www.dailyekusherbangla.online : দৈনিক একুশের বাংলা : দৈনিক একুশের বাংলা
  2. info@www.dailyekusherbangla.online : দৈনিক একুশের বাংলা :
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুমিল্লার বাঙ্গরায় খালের উপর সেতু না থাকায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে! বাংলাদেশ ভূমিহীন গৃহহীন হাউজিং লি. ও বিএনএনসি’র উদ্যোগে সাভারে অবৈতনিক বিদ্যালয় ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন বোয়ালখালীতে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় টিকা প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ – কানিজ ফাতেমা জুলাই গণঅভ্যুত্থান: জনগণ কতটুকু পেল সেই প্রাপ্তির স্বাদ? মুরাদনগরে পুকুরে গিলে খাচ্ছে এলজিইডি সড়ক ডিমলায় ভেন্ডাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে “মা”সমাবেশ কুমিল্লার দেবীদ্বারে স্বামীকে খাবার আনতে পাঠিয়ে স্ব্রীকে ২ বন্ধু পালাক্রমে ধর্ষণ: গ্রেফতার-২ মৌলভীবাজারে হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে মিলাদ মাহফিল ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত মুরাদনগরে দাফনের ১৯ দিন পর কবর থেকে স্কুলছাত্রী সোহাগীর লাশ উত্তোলন ভাঙ্গার পূর্ব আলগীতে জমি বিরোধে উত্তেজনা: নিজের লাগানো মেহগনি গাছ কাটতে বাধা

জুলাই-পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতা: নির্বাচন অনিশ্চয়তা নতুন শক্তির উত্থান ?

আওরঙ্গজেব কামাল :
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪৭ বার পড়া হয়েছে

জুলাই-পরবর্তী সময়কে ঘিরে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর পুনর্গঠন, কিন্তু বাস্তবে জাতীয় রাজনীতি নতুন করে অনিশ্চয়তার ঘূর্ণিতে পড়েছে। রাজপথ থেকে প্রশাসন, গণমাধ্যম থেকে সামাজিক পরিমণ্ডল—সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব, দমনচর্চা, ফ্যাকশনাল ইউনিয়ন, মাদকচক্র, অপপ্রচার এবং নির্বাচনী ধোঁয়াশা। প্রতিনিয়ত কারণে অকারনে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার যেন নিয়ন্ত্রণহীন।
গণঅভ্যুত্থানের পর যে রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি উচ্চারিত হয়েছিল, স্বৈরাশ শাসন চিরতরে নিপাতের অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। সমাজের সকল বৈষম্য দূর করার দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিল। সেটা রূপ পেয়েছে স্বার্থকেন্দ্রিক গোষ্ঠীর দখলদারিত্বে, আর বিভিন্ন মহলে দমনের আতঙ্ক ও প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা নতুন রূপ নিচ্ছে। বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকার সাধ্যমত চেষ্টা করছে নিয়ন্ত্রণ করার কিন্তু সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে সেটা কখনো বাস্তবায়ন হবে না। জুলাই সনদ নিয়ে এত তালবাহানা। মানে জুলাই শহীদদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করা। প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক পরস্পর বিরোধীর বক্তব্যে জনমনে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) উচ্চপর্যায় থেকে এখনো জোর দিয়ে বলছে যে স্বচ্ছ পরিবেশ, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও জনআস্থার নিশ্চয়তা ছাড়া তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বৈধ হিসেবে বিবেচনা করবে না। পর্যবেক্ষণভিত্তিক অংশ গ্রহণ এবং নির্দলীয় তদারকির দাবি তাদের মূল বক্তব্যে থেকে গেছে। দলটির বহু নেতা মনে করেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে ফেরার জন্য এখনও স্পষ্ট রূপরেখা ও বাস্তবিক সহায়তা দরকার। বিএনপির দাবি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে হবে এবং সেটা নিরপেক্ষতা হবে।
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের উপর নিরপেক্ষতার বিষয়ে এখনো সঠিক আস্থা রাখতে পারছে না দলটি। যদিও বিএনপি এখনো তাদের প্রার্থীর চূড়ান্ত করতে পারিনি। তাদের দাবি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘসময় নিষ্ক্রিয় থাকার পর নতুন কাঠামো ও মাঠপর্যায়ের তৎপরতার মধ্য দিয়ে জনসম্পৃক্ততা ফিরে পেতে চাইছে। ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র শিবিরের জয় তাদের একটু বড় অর্জন। শীর্ষ নেতৃত্বের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ এবং রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা ছাড়া কোনো নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য হবে না। তারা নিজেদের অবস্থানকে ‘জনরায় নির্ভর প্রচেষ্টা’ হিসেবে তুলে ধরছে এবং গ্রামীণভিত্তিক সংগঠনে আবারও গতি আনছে। ইতিমধ্যে তারা ৩০০ আসনের প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছেন। তবে জামাত নেতৃবৃন্দ হয়তো শরিকদের কিছু আসন ছেড়ে দিতে পারে। এদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন শক্তি হিসেবে এনসিপি (ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টি) নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। তাদের নেতৃত্ব দাবি করছে, জনগণ এখন পুরনো দুই ধারার বাইরে বিকল্প চায়, এবং তারা তরুণ সমাজ, বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতি ও নিরাপত্তা ইস্যুকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা স্বতন্ত্রভাবে বা সমঝোতার জোটে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও খোলা রেখেছে। তারা জামাতের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে একই মঞ্চে অনেক বার তারা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে জামাত ও তার সমমনা দলগুলি মাঠে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। নির্বাচন হবে কেমনভাবে—নিয়ন্ত্রিত নাকি স্বাভাবিক? এই প্রশ্ন এখন পুরো দেশে। নির্বাচন কমিশন এখনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপন করতে পারেনি। এছাড়া নির্বাচনের প্রজেটিং অফিসারদের নিয়ে নানাবিধ মতামত রয়েছে জনমনে।
অনেকের মতে, মাঠপর্যায়ে প্রশাসনিক প্রভাব, নিরাপত্তা কাঠামো এবং রাজনৈতিক দরকষাকষির ওপর নির্ভর করবে ভোটের চরিত্র। কেউ কেউ মনে করছেন “পিয়ার প্রভাবিত ভোটিং”—অর্থাৎ দলীয়-গোষ্ঠীচাপ ও স্থানীয় প্রভাব নির্ভর সিদ্ধান্ত—ভবিষ্যৎ ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা নেবে। তরুণ সমাজ এখন সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। পছন্দের নেতৃত্ব খুঁজে না পাওয়া, তাদের চিন্তা-চেতনা মনে হচ্ছে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে মিলাতে পারছেন না। তারা যে জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থান করেছিল সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে সে বিষয়ে অনেকের মধ্যেও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। বর্তমানে
উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সংকট, বিদেশমুখী মানসিকতা এবং সামাজিক বঞ্চনা তাদের রাজনৈতিক অংশ গ্রহণে হতাশা তৈরি করেছে। বন্ধু মহল, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও ব্যক্তিগত সুবিধাবাদী ধারণার ওপর ভিত্তি করে অনেকেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা ভোটের মানসিকতা পাল্টে দিতে পারে।
রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের অস্থির ব্যবধানে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি নতুনভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে। ইয়াবা, আইস, ফেন্সিডিলসহ নানা মাদকের প্রবাহ শহর ও গ্রামে আবার বেড়েছে। স্থানীয় দখলদার, টোলবাজ ও প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র সক্রিয় হয়েছে। রিকশা ভ্যান এমন কি সুইপারের মতন কাজও চলছে অর্থের লেনদেন। এছাড়া প্রশাসন অনেকক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় বা দলনির্ভর ভূমিকা রাখছে, ফলে সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। থানায় যে দেখা যায় এখনো পুলিশ পূর্বে অবৈধ পন্থা গুলো ধরে রেখেছে। বর্তমানে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ওপরও বেড়েছে নানা চাপ। অনলাইন অপপ্রচার, চরিত্রহনন, ভুয়া তথ্যপ্রবাহ, মামলা, হুমকি ও ডিজিটাল আক্রমণের ফলে সত্যভিত্তিক গণমাধ্যম সংকটে পড়েছে। কিছু প্রভাবশালী মিডিয়া রাজনৈতিক ছায়ায় থেকে ভুল বার্তা প্রচার করছে। বারবার অন্তবর্তী দিনকালীন সরকারকে বেকায়দা ফেলার চেষ্টা করছেন।অন্যদিকে স্বাধীন সাংবাদিকেরা হুমকি, নোটিশ বা ভয় দেখানোর মুখে পড়ছেন বারবার। এর ফলে মতপ্রকাশ ও তথ্যপ্রবাহ উভয়ই নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বন্দী হয়ে যাচ্ছে। জুলাই-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে দমননীতি, গ্রেফতার আতঙ্ক এবং নিখোঁজ হওয়ার ভয় আবারও আলোচনায় এসেছে। অনেকেই বলছে, ভিন্নমতের কণ্ঠ বা নাগরিক আন্দোলনকে দুর্বল করতে গোপন নজরদারি ও হাইব্রিড প্রভাব ব্যবস্থার আশ্রয় নিচ্ছে ক্ষমতার বিভিন্ন অংশ। এতে রাজনৈতিক সংস্কারের পরিবর্তে দমন ও ভয়টাই কার্যকর হাতিয়ার হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে দেশে এখন তিনটি সমান্তরাল বাস্তবতা স্পষ্ট হচ্ছে: ক্ষমতা দখল ও পুনর্বিন্যাসের খেলা, অপরাধ-অর্থনীতি-দমনচক্রের বিস্তার, এবং অসন্তুষ্ট তরুণসমাজের বিকল্পমুখী মানসিকতা। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি নিজেদের অবস্থান দৃশ্যমান করতে চাইছে বটে, কিন্তু স্বচ্ছ নির্বাচন, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা এবং রাজনৈতিক সহনশীলতা নিশ্চিত না হলে ভোটের স্বীকৃতি ও ফলাফল নিয়ে জনমনে সংশয় থেকেই যাবে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা তখনই টিকে থাকে, যখন জনগণের মতপ্রকাশ দমন করা হয় না, সাংবাদিককে ভয় দেখিয়ে থামানো হয় না এবং তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। পরিবর্তনের যে প্রতিশ্রুতি জুলাইয়ের পর উচ্চারিত হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে এবং কারা সেটি কার্যকর করবে—এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন দেশের জনসাধারণের মনে। জনসাধারণের আলোচনায় এখন নতুন কোন শক্তির সম্ভাবনাই রয়েছে কিন্তু দেশ। আর সেটা বাস্তবায়িত হলে দেশে কি কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হবে কিনা।
লেখক ও গবেষক:
আওরঙ্গজেব কামাল
সভাপতি, ঢাকা প্রেসক্লাব সব

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট