গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির জন্য দায়ী গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ডাঃ নাজমুল করিমের মদদপুষ্ট হয়ে চলাফেরা করা সদর থানার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক প্রলয় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
জানা যায়, সন্ত্রাসী রাজু সাহা ২০২৪ সালের ০৭ অক্টোবর দুপুর পৌনে ২ টার দিকে প্রকাশ্যে গোলাগুলি করে হত্যা চেষ্টার মামলার অন্যতম আসামী। একই ঘটনা জড়িত ছিল রাজুসহ ১৮/১৯ জন সন্ত্রাসীও। ঘটনার দিন স্থানীয় কৃপাময়ী কালিমন্দিরের সামনে সদর থানার সাহাপাড়া এলাকার সন্ত্রাসী রাজু সাহা, সাব্বির আহমেদ সৌরভ, রক্তিম প্রত্যেকে বিদেশী অবৈধ পিস্তল দিয়ে গুলি করে। এর ফলে সফিকুল ইসলাম টিটু ও পথচারী সাবেদ গুরুতর আহত হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা খুন করতে ধারালো রাম দা দিয়ে কোপ দিয়ে মনিরুল ইসলাম সাগর, মমিন, ওলিউল্লাহ তুহিনকে কাটা রক্তাক্ত গুরুতর আহত করে। এঘটনায় তুহিনের স্ত্রী আরিফা আক্তার হাসি থানায় এজাহার দায়ের করলে পেনাল কোডের ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৪/৩২৬/৩০৭ ধারায় ১৩(১০)২০২৪ নং মামলাটি রুজু করা হয়। মামলাটি দায়েরের পর ১০ মাসেও মামলার পুলিশ অলৌকিক কারণে কোন আসামী গ্রেফতার করে নি। বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশের কর্মকাণ্ডে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। যার কারণে সন্ত্রাসীরা উচ্চ আদালত হতে গত সোমবার (১১ আগস্ট) ৬ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন প্রাপ্তির পর বেরিয়ে আসে থলের বেড়াল। গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে দেখা যায়, রাজু সাহাসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেরি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে রয়েছে গভীর সখ্যতা।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনাটি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশ জটিল এবং স্পর্শকাতর। এঘটনায় দৈনিক প্রলয় পত্রিকায় গত সোমবার (১৮ আগস্ট) সংবাদ প্রকাশের জেরে সন্ত্রাসী রাজু সাহা ১৮ দিন আগের মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে এজাহার দায়েরের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকের প্রতি আক্রোশে সদর থানায় ৪৪ নং মামলাটি রুজু করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রেলের জায়গা ও রাস্তা দখল করে চাঁদা বাজি করার কারণে গত ৬ আগস্ট দুপুরে সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোফাজ্জল, রাজু সাহা, রক্তিম, সৌরভ, ফজল, খন্দকার রুবেল, শাখাওয়াত, মোজাম্মেলসহ তাদের অনুসারীদের তথ্য ও ফুটেজ সংগ্রহ করতে গেলে সদর থানা পুলিশের সামনেই সাংবাদিক মোঃ আনোয়ারের উপর অতর্কিত হামলা করে ইট দিয়ে আনোয়ারের পা থেঁতলে দেয়। এঘটনায় আনোয়ারের মা এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় ১৫(৮)২৫ নং মামলাটি দায়ের করে। এঘটনায় জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং সারাদেশে গণমাধ্যমকর্মীগণ মানববন্ধন করেন। “”জিএমপি কমিশনারের মদদপুষ্ট অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজু সাহা “” এই শিরোনামে দৈনিক প্রলয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এই ক্ষোভে তাদের অপরাধ লুকাতে রাজু সাহা এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথা চাঁদা বাজির মামলাটি দায়ের করে। এই ঘটনায় গাজীপুরসহ সারাদেশে পুলিশের কর্মকাণ্ডে গণমাধ্যমকর্মীসহ সুশীল সমাজ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এবিষয়ে জানতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ডাঃ নাজমুল করিম খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।